বাংলাদেশের ইতিহাসে অন্যতম নৃশংসতম হত্যাযজ্ঞের আরেক ভয়াল রক্তঝরা দিন। ২০০৪ সালের এই দিনে মুহুর্মুহু গ্রেনেডের বিকট বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে ঢাকার বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ। রাজধানী ঢাকার মানুষ তথা তাবৎ পৃথিবীর মানুষ দেখল আর্তনাদ , হাহাকার আর আর্ত চিৎকারে হৃদয় কাঁপানো বিভীষিকাময় বীভৎস হত্যাযজ্ঞ।
এই দিনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আয়োজিত সন্ত্রাস-বিরোধী মিছিলপূর্ব সমাবেশে দলটির সভাপতি বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে গ্রেনেড হামলা এবং গুলিবর্ষণ করে নরপিশাচ রূপী ঘাতক দল। এই মধ্যযুগীয় ও বর্বরোচিত হামলার ঘটনায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ২৪ জন নেতাকর্মী নিহত হন। আহত হন অন্তত পাঁচ শতাধিক নেতাকর্মী । যাদের অনেকেই চিরতরে পঙ্গু হয়ে গেছেন। কেউ কেউ আজও ফিরে পাননি স্বাভাবিক জীবন।
গ্রেনেডের স্পিন্টারের দুর্বিষহ যন্ত্রণা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন মৃত্যুর দিকে। নেতাকর্মীদের মানব প্রাচীরের কারণে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা প্রাণে বেঁচে গেলেও শ্রবণশক্তি অনেকাংশেই হারিয়ে ফেলেছিলেন তিনি। এ-ই বর্বরোচিত গ্রেনেড হামলার প্রতিবাদে এবং হতাহতদের স্মরণে প্রতিবছর সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদবিরোধী নানা কর্মসূচি পালন করে আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন সংগঠন। এবারও নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিনটি পালিত হবে। দিনটি উপলক্ষ্যে পৃথক পৃথক বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সেদিনের সেই নৃশংস হত্যাযজ্ঞে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের সহধর্মিণী ও আওয়ামী লীগের তৎকালীন মহিলাবিষয়ক সম্পাদক আইভি রহমানসহ ২৪ জন নিহত হন।
এই বর্বরোচিত হামলায় নিহত অন্যারা হলেন প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত নিরাপত্তারক্ষী ল্যান্স করপোরাল (অব.) মাহবুবুর রশীদ, আবুল কালাম আজাদ, রেজিনা বেগম, নাসির উদ্দিন সরদার, আতিক সরকার, আবদুল কুদ্দুস পাটোয়ারি, আমিনুল ইসলাম মোয়াজ্জেম, বেলাল হোসেন, মামুন মৃধা, রতন শিকদার, লিটন মুনশী, হাসিনা মমতাজ রিনা, সুফিয়া বেগম, রফিকুল ইসলাম (আদা চাচা), মোশতাক আহমেদ সেন্টু, মোহাম্মদ হানিফ, আবুল কাশেম, জাহেদ আলী, মোমেন আলী, এম শামসুদ্দিন, ইসাহাক মিয়া প্রমুখ।