গ্রাম বাঙলার ঐতিহ্যবাহী মাছ ধরা উৎসব অনুষ্ঠিত হয়ে গেল কিশোরগঞ্জের প্রসিদ্ধ ও সুপ্রাচীন রৌহা বিলে। কিশোরগঞ্জ এবং পার্শ্ববর্তী জেলার বিভিন্ন অঞ্চলের শিশু-কিশোরসহ কয়েক হাজার সৌখিন মাছ শিকারী অংশ নেয় এ উৎসব আনন্দে এ বিলে মাছ ধরতে । মাছ ধরার উৎসব যেনো শেষ পর্যন্ত পরিণত হয় মহোৎসবে।
জানা গেছে, কিশোরগঞ্জের সুপ্রাচীন রৌহা বিলের মাছ ধরা উৎসবের ইতিহ্য শত বছরের। কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার চৌদ্দশত ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে অবস্থিত এ প্রসিদ্ধ বিল। প্রতি বছর ভাদ্র মাসের পাঁচ তারিখ দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত হয় এ বিলে মাছ ধরার উৎসব। দেশের অন্যান্য অঞ্চলে পলোসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম দিয়ে মাছ ধরার এ উৎসবকে বাউত উৎসব বলে ডাকলেও কিশোরগঞ্জবাসীর কাছে এ উৎসব হাইত বা হাথ উৎসব হিসেবে পরিচিত।
বুধবার এ বিলে হয়ে গেলো এ মাছধরা উৎসবে। এ উৎসবে অংশ নিতে কিশোরগঞ্জসহ পার্শ্ববর্তী নরসিংদী, গাজীপুর, ময়মনসিংহ ও নেত্রকোনা জেলার কয়েক হাজার লোক ছুটে আসে। মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর থেকেই প্রাইভেট কার, মাইক্রোবাস, বাস, সিএনজি চালিত অটোরিকশা এবং পায়ে হেঁটে এসে রৌহা বিল পাড়ের চারপাশে অবস্থান নিতে থাকে এসব লোকজন। ভোরের আলো ফুটার আগেই পলো, জাল, জালি, কোঁচ, এক কাটা, টে কাটাসহ মাছ ধরার নানা ধরনের সরঞ্জাম নিয়ে বিলের পানিতে নামতে শুরু করে সৌখিন মাছ শিকারীরা। আনন্দ সূচক ডাক ভেঙে বুধবার সারাদিন ব্যাপী চলে হাজারো মানুষের মাছ ধরার এ উৎসবে।
মাছধরা উৎসব সরেজমিন পরিদর্শন কালে কথা হয় কিশোরগঞ্জের বিভিন্ন উপজেলাসহ পার্শ্ববর্তী নরসিংদী, গাজীপুর, ময়মনসিংহ ও নেত্রকোনা জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত বিভিন্ন বয়সী মাছ শিকারীদের সঙ্গে। এ সময় তারা জানান, বিভিন্ন কারণে দিনে দিনে প্রাকৃতিক মাছের অভয়াশ্রম গুলোর বিলুপ্তি ঘটছে। কিন্তু ; কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক রৌহা বিল আজ-ও আবহমান কালের এ ঐতিহ্য ধারণ করে টিকে আছে। দেশের এমন সব মাছের প্রাকৃতিক অভয়াশ্রম গুলো রক্ষায় সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা জরুরি বলে দাবি তাদের।