বিশ্বকাপ ফুটবলের বিরোধ কেড়ে নিল যুবকের প্রাণ, ধূলায় লুটালো স্বপ্ন

হোসেনপুর প্রতিনিধি

 জেলার  হোসেনপুরে বিশ্বকাপ খেলার দ্বন্দ্বের জেরে আহত রাতুল মিয়া (২২) নামে যুবক নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার  চিকিৎসার জন্য ঢাকা নেয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। 

নিহত যুবক রাতুল মিয়া হোসেনপুর  উপজেলার সিদলা ইউনিয়নের সাহেবেরচর গ্রামের হাজী বাড়ির মৃত রফিকুল ইসলামের ছেলে।
 
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত রোববার (৫ ফেব্রুয়ারি) রাতে উপজেলার সাহেবেরচর গ্রামের শুলু শাহার মাজারে মেলা দেখতে যান রাতুল মিয়া ও তার বন্ধুরা। এসময় একই গ্রামের আজিজ মিয়ার ছেলে বকুল, খোকন মিয়ার ছেলে মুন্না ও কবির হোসেনের ছেলে তালিবসহ কয়েকজন রাতুলের সঙ্গে ঝগড়ায় লিপ্ত হয়। 
 
ঝগড়ার এক পর্যায়ে তারা রাতুলকে বেদম মারধর করে। এতে গুরুতর আহত হলে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখান প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ  হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানেও রাতুলের অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় মঙ্গলবার  ঢাকা নেয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। নিহতের লাশ বাড়িতে নিয়ে আসার পর পুলিশ ময়নাতদন্তের জন্য কিশোরগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
 
এর আগে   কাতারে অনুষ্ঠিত বিগত  বিশ্বকাপের আর্জেন্টিনা ও ক্রোয়েশিয়ার মধ্যে অনুষ্ঠিত  বড় পর্দায় খেলা দেখা  নিয়ে  কথা কাটাকাটির ঘটনা ঘটেছিল তাদের মধ্যে । ওই দ্বন্দ্বের জেরে প্রতিপক্ষের নিষ্ঠুর হামলায় মৃত্যু হয় রাতুলের।
 
পুলিশ ও   পারিবারিক সূত্র জানায় , নিহত রাতুল গাজীপুরের  একটি পোশাক কারখানায় কাজ করতেন। সংসারে সচ্ছলতা ফেরাতে আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি  সৌদি আরবের উদ্দেশ্যে পাড়ি জমানোর কথা ছিল তার। কিন্তু; এর  এক সপ্তাহ আগেই বিশ্বকাপ খেলাকে কেন্দ্র করে বিরোধের   তুচ্ছ ঘটনায় প্রতিপক্ষের বর্বরোচিত  হামলায় গুরুতর  আহত হয়ে না ফেরার দেশে পাড়ি জমাল রাতুল।
 
 রাতুলের মৃত্যুতে পরিবার ও এলাকাবাসীর মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। একই সময় এ ঘটনায় এলাকায় চরম  উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।  এক পর্যায়ে বিক্ষুব্ধ লোকজন ঘাতকদের  ঘর-বাড়িতে হামলা চালিয়ে  ভাঙচুর করে। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে  পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
 
হোসেনপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদুজ্জামান টিটু জানান, এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি আরও জানান, ঘটনার পরপরই অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করা হয়েছিল। পরবর্তীতে রাতুলের মৃত্যুর ঘটনায়  উত্তেজিত  গ্রামবাসী অভিযুক্তদের ঘর-বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর এবং  বাড়ির উঠানে থাকা একটি খড়ের পাল্লায় আগুন লাগিয়ে দেয়।  ফায়ার সার্ভিস এবং পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। কিন্তু ; শেষ পর্যন্ত রাতুল মারা যাওয়ায়  মামলাটি ৩০২ ধারায়  পরিবর্তিত হয়েছে।  আসামিদের গ্রেফতারে  অভিযান অব্যাহত আছে।