২০১৬ সালের রক্তক্ষয়ী ভয়াবহ জঙ্গি হামলাও উপ-মহাদেশের ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানের ঈদুল ফিতরের জামাত ঠেকাতে না পারলেও এবার প্রাণঘাতী করোনা সংক্রমণ আতঙ্ক জামাত ঠেকিয়ে দিয়েছে।
করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে সরকারের ধর্ম মন্ত্রনালয়ের নির্দেশে দেশের ঐতিহ্যবাহী কিশোরগঞ্জের দুইশো বছরের প্রাচীন এ মাঠের ১৯৩ তম ঈদুল ফিতরের জামাত বন্ধ রাখা হয়।
একই সঙ্গে জেলার সকল ঈদগাহ ময়দান ও উন্মুক্ত মাঠের জামাত বন্ধ রাখা হয়। সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্য বিধি মেনে ঈদুল ফিতরের জামাত অনুষ্ঠিত হয় কিশোরগঞ্জ জেলার ৫ হাজার ১২৫ টি মসজিদে।
জেলা ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উপ-পরিচালক ফারুক আহমেদ জানিয়েছেন, ঈদগাহ বা খোলা মাঠের পরিবর্তে স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রতিটি মসজিদে এক বা একাধিক ঈদ জামাত আয়োজনের জন্য জেলা প্রশাসন ও ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে সকল মসজিদ পরিচালনা কমিটিকে নির্দেশনা দেওয়া হয়।
আর এ কারণেই এই প্রথমবারের মতো কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে ঈদুল ফিতরের জামাত অনুষ্ঠিত হয়নি।
জেলা প্রশাসক মো. সারওয়ার মুর্শেদ চৌধুরী জানান, সকাল ৮টায় প্রথম জামাত, ৯টায় দ্বিতীয় জামাত ও ১০টায় তৃতীয় জামাত অনুষ্ঠানের জন্য মসজিদগুলোকে আগে থেকেই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল।
মুসল্লি সমাগম দেখে জামাত অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত নেয় মসজিদ কমিটি।শহরের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদ ও ঐতিহাসিক শহীদী মসজিদসহ অনেক মসজিদে সর্বোচ্চ তিনটি জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এ সময় তিনি আরও জানান, দেশের বিভিন্ন স্থানের ধর্মপ্রাণ মুসল্লী সমাগম বন্ধ করতে ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানের জামাত স্থগিতের বিষয়টি আগে থেকেই প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় প্রচারের পাশাপাশি এলাকায়ও মাইকিংয়ের মাধ্যমে ব্যাপক প্রচারণার ব্যবস্থা নেয়া হয়েছিল।
উল্লেখ্য, প্রায় দুইশো বছর আগে কিশোরগঞ্জ শহরের নরসুন্দা নদী তীরে প্রতিষ্ঠিত ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে এবার ১৯৩ তম ঈদুল ফিতরের জামাত অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল।
এ ঐতিহাসিক ঈদগাহ ময়দানে প্রতি বছর দেশ বিদেশের তিন লাখের বেশি ধর্মপ্রাণ মুসল্লী ঈদুল ফিতরের জামাত আদায় করতেন।